মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬

আত্মবিশ্বাস নিয়ে কিছু কথা

"আত্মবিশ্বাস নিয়ে কিছু কথা"

প্রতিযোগিতার এই যুগে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কোন বিকল্প নেই। কিছু ব্যাপার চর্চা করার মাধ্যমে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা সম্ভব।

আত্মবিশ্বাস অর্জন করা কোন রাতারাতি ব্যাপার নয়। দীর্ঘদিনের চর্চা এবং অভ্যাসে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠে। আত্মবিশ্বাস কেউ কাওকে দিতে পারে না, নিজে নিজেই অর্জন করতে হয়। যেকোনো কাজে সফল হতে হলে আত্মবিশ্বাসী হওয়া জরুরী। আমাদের প্রায়ই বিভিন্ন কাজে বা ভাইভা বোর্ডে শুনতে হয় আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। ক্ষতি কি যদি আমরা নিজেদের একটু আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া দিতে পারি।

সফলতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। অনেকে আছেন যারা আত্মবিশ্বাসের অভাবেই নিজেকে তুলে ধরতে পারেন না। জীবনের লক্ষ্য অর্জনের শেষ বিন্দুতে পৌঁছাতে হলে আত্মবিশ্বাস অর্জনের কোনো বিকল্প নেই।

নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে উপস্থাপন করুনঃ

(১) স্মার্ট পোষাক, পরিচ্ছন্নতা, হালকা সুগন্ধী আপনার স্মার্টনেস কেবল অন্যের চোখেই না আপনার নিজের চোখেও নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। সকালে অফিসে যাবার আগে ১০ মিনিট বেশি ব্যয় করুন নিজের পেছনে। দেখবেন, সারাদিন নিজেকে প্রেজেন্টেবল আর আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে।

অঙ্গভঙ্গীতে আত্মবিশ্বাসী ভাব ফুটিয়ে তুলুনঃ

(২) মেরুদণ্ড সোজা ও মাথা উচু করে হাঁটুন। মাথা নিচু করে কুজো হয়ে হাঁটবেন না। এতে আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অন্যদের ধারণা খারাপ হবে।

(৩) সহকর্মী বা বসের নেতিবাচক কথা মনে ধরে রাখবেন না। একটি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ কেউ প্রশংসা করে আবার কেউ ভুল ধরিয়ে দিয়ে কাজ আদায় করতে চেষ্টা করেন। বুঝতে চেষ্টা করুণ আপনার বসের মানসিকতা কেমন।হয়তো তিনি আপনার সম্পর্কে নানা নেতিবাচক কথা বলছেন আপনার কাছ থেকে তার প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ আদায় করতে। আর সেটা কি আপনার যোগ্যতার কারণেই নয়? চেষ্টা করুন নিজের ভুলগুলো শুধরে নেবার।
আবার সহকর্মীরা হয়তো অনেক সময় আপনার নামে নেতিবাচক কথা বলে থাকে, আপনার কাজের দক্ষতাকে ঈর্ষা করে বলেই এমনটা হয়!

কথা বলুন চোখে চোখ রেখেঃ

(৪) যখনই কারো সাথে কথা বলবেন তার চোখে চোখ রেখে কথা বলুন, কথা বলার সময় এদিক ওদিক তাকাবেন না বা অন্য কিছু করবেন না। এটি আত্মবিশ্বাসী হবার একটি অন্যতম চিহ্ন।

মনোযোগ দিয়ে শুনুন, তারপর বলুনঃ

(৫) কেউ যাখন আপনার সাথে কথা বলছেন তখন তার কথার মাঝখানে কথা বলবেন না বা প্রশ্ন করবেন না। আগে শুনুন। এতে তিনি ভাববেন আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং তখন তিনিও আপনার কথা শুনতে আগ্রহী হবেন। কেউ যখন আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

নিজের ব্যাপারে নেতিবাচক কথা বলবেন নাঃ

(৬) আমি খুব অগোছালো, ডেডলাইন ছুঁতে পারি না, ধীরে কাজ করি, অন্যদের মত ভালো প্রেজেন্টেশন করতে পারি না, ইত্যাদি নিজের নেতিবাচক দিকগুলো কখনোই কর্মস্থলে বলতে যাবেন না। নিজের ইতিবাচক দিকগুলো বলুন, এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে আবার সহকর্মী বা বসের কাছেও আপনি গ্রহণযোগ্যতা পাবেন।

মানুষজনের সাথে মিশুন ও নেটওয়ার্ক বাড়ানঃ

(৭) পরিচিতির গণ্ডি বাড়ানোর পাশাপাশি এটি আপনার মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন, ব্যক্তিত্ব ও জ্ঞানের পরিধি বাড়াবে। আশেপাশে মানুষের একটি বড় বৃত্তে আপনি অনেক বেশি নিরাপদ ও আত্মবিশ্বাসী বোধ করবেন।

নিজের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তিগুলো লিখে ফেলুনঃ

(৮) মানুষজনের কথায় কেবল নিজের অপ্রাপ্তি নিয়ে হতাশায় ভুগবেন না। বরং ভাবুন নিজের প্রাপ্তিগুলো নিয়েও। লিখে ফেলুন একটি ডায়েরিতে আগামীর লক্ষ্যও। দেখবেন হারানোর চেয়ে অর্জন আর সম্ভাবনায়ই ভরে উঠেছে আপনার খাতা ও মন।

আগ্রহের জায়গায় দক্ষতা বাড়ানঃ

(৯) ভাষা, পড়াশোনা বা প্রযুক্তি, যেখানেই আপনার আগ্রহ থাকুক না কেন, দক্ষতা বাড়ান, আপনার পেশাদারী আত্মবিশ্বাসে একটি নতুন পালক যুক্ত হবে, সন্দেহ নেই।

অন্যদের সাহায্য করুনঃ

(১০) যতটা সম্ভব অন্যদের সাহায্য করুন। সমাজসেবা জাতীয় সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকুন। অন্যের উপকার করার মধ্য দিয়ে আপনি নিজের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠবেন। নিজেকে নিজে বড় ভাবতে না পারলে আপনার আত্মবিশ্বাস কখনোই বাড়বে না।

ক্ষতিকর মানুষদের সঙ্গ ত্যাগ করুনঃ

(১১) যারা কেবল আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক কথাই বলে ও সুযোগ পেলে আপনার ক্ষতি করতেও দ্বিধা করবে না, হোক বন্ধু বা সহকর্মী, এদের কাছ থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখুন। আপনার কনফিডেন্স লেভেল কমাতে এদের জুড়ি নেই।

সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৬

ফ্রিল্যান্সারদের সফলতার কথা

সফলতার কথা

শনিবার (23/02/13) অনুষ্ঠিত “আমার ফ্রিল্যান্সিং জীবনঃ ভিডিও নাইট” অনুষ্ঠানে আমি আমন্ত্রিত হয়েছিলাম একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা সবার সামনে তুলে ধরার জন্যে। এই ধরনের ইভেন্টে আমন্ত্রিত হয়ে আমি অনেক আনন্দিত। যদিও আমাকে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আমন্ত্রন জানানো হয়রছিল তবে সবার অভিজ্ঞতার গল্প শুনে এটুকু আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি যে আমি এখনও ১০০০ সফল ফ্রিল্যান্সারদের একজনও হতে পারিনি। আমার গল্পটা খুবই সাধারণ এবং ছোট। তবে সেখানে অন্যদের গল্প থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। তবুও লেখার জন্যে গল্পটা দিয়েই শুরু করি।

আমার ফ্রিল্যান্সিং জীবনঃ

২০০৫ সালে যখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তখন বিভিন্ন পত্রিকা এবং লিফলেটের মাধ্যমে জানতে পারি “ঘরে বসে অনলাইনে আয় করুন” জাতীয় একটি ব্যাপার আছে। আমি সবসময় এই ধরনের কোন কাজের প্রত্যাশায় ছিলাম। তাই ঐসব ঠিকানায় যোগাযোগ শুরু করলাম। অনেক জায়গায় সরাসরি গেলাম। সবার কথা আমার কাছে সন্তোষজনক মনে হতো না। টাকা পয়সার ব্যাপারও ছিল। এটুকু বুঝলাম কম্পিউটার জ্ঞান অতি জরুরি। কম্পিউটার কিনে ফেললাম। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হল না। পূর্বের কোন ধারণা না থাকায় দু দিন পর পর এটা ওটা সমস্যা হতো, এক সময় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেলো, আমি হতাশ হলাম। তারপর হার্ডওয়্যার এর উপর একটা কোর্স করলাম। পাশাপাশি সাইবার ক্যাফেতে বসে নানান ব্যাপার নিয়ে ঘাটাঘাটি করতাম। আমার বন্ধু মাকসুদ একদিন oDesk এর ব্যাপারে আমাকে জানালো। oDesk এ সাইন আপ করি ২০১০ সালের আগস্ট মাসে। আরও ঘাটাঘাটি করে দেখলাম আগে কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। মাকসুদ তখন এস, ই, ও, শিখছিল। রনি এবং মনির ছিল ওর সাথে। আমি এবং রানা যোগ দিলাম। সবাই মিলে প্রচুর পড়াশোনা করতাম, শেয়ার করতাম। আস্তে আস্তে করে শিখছিলাম এস, ই, ও, এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং এর আরও কিছু বিষয়। কাজ খুজতে শুরু করলাম বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে। ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ প্রথম কাজ পেলাম oDesk এ। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত কাজ করছি আর শিখছি। এই পর্যন্ত মোট ১৭টি প্রোজেক্ট এ কাজ করেছি। আমার এই পর্যন্ত আসার পিছনে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশী, যাদের সহযোগিতা ছাড়া আমি এইটুকুও করতে পারতাম না তারা হল আমার চার বন্ধু মাকসুদ, রানা, রনি এবং মনির। এই চারজনের কাছে আমি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ।

আমার কাজের ক্ষেত্রসমূহঃ

শুরুর দিকে লিংকবিল্ডিং এর বিভিন্ন পদ্ধতি শিখছিলাম, পরে এস, ই, ও, এর অন্যান্য অংশ নিয়ে পড়াশোনা করি। তারপর ইন্টারনেট মার্কেটিং সম্পর্কে পড়াশোনা করি। এখন ইন্টারনেট মার্কেটিং এর উপরই দুটি প্রজেক্টে কাজ করছি। আর কাজের পাশাপাশি ওয়েব ডিজাইনিং এন্ড ডেভলপমেন্ট শিখছি। এইচ, টি, এম, এল এবং সি, এস, এস সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা হয়েছে। বাকিটাও শিখে ফেলব ইনশাআল্লাহ্‌।

নতুন সম্ভাবনার নাম ফ্রিল্যান্সিংঃ

বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্বমানের এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অনেক সফল ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। যাদের সফলতার গল্প শুনে অনেকেই নতুন করে ফ্রিল্যান্সিং এ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা সুখবর। সাম্প্রতিক সময় সাইদ ভাই, DEVS TEAM এবং আরও কিছু একক ফ্রিল্যান্সার তাদের নিজ নিজ কাজের জন্যে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন, বিজয়ী হয়েছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়। নিজেদেরকে যেমন প্রমাণ করেছেন বিশ্বসেরা হিসেবে একইসময় প্রতিনিধিত্ব করেছেন বাংলাদেশের কাজের গুণগত মানকে এবং বাংলাদেশকে। প্রতিদিন প্রায় এক কোটি টাকার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে এই ফ্রিল্যান্সাররা। এদের প্রায় সবাই ঘরে বসে কাজ করে কোন রকম প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ছাড়া। সবাই মিলে আরও অনেক ভালো ভালো কাজের মাধ্যমে আমরা নিজেরা এগিয়ে যাব এবং একইসাথে আমাদের দেশটাকেও এগিয়ে নিয়ে যাব। আমি ব্যাক্তিগতভাবে চাই আমার দেশের তরুন প্রজন্ম ফ্রিল্যান্সিং এর প্রতি আগ্রহী হয়ে নিজেদেরকে দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলবে। সারা বিশ্বের অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে নিজেদেরকে সফলতার সাথে পরিচিত করবে। দেশের বেকারত্বের হার কমাবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। চাকরীর আশায় বসে না থেকে নিজেরাই নতুন নতুন পদ সৃষ্টি করে বেকারত্ব দূরীকরণে সরকারের সহায়ক হবে।

নারীর স্বাধীনতায় ফ্রিল্যান্সিংঃ

সম্ভাবনার আরও একটি বড় বিষয় হল এর সাথে নারীর সম্পৃক্ততা। আমাদের দেশে যেখানে উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে অনেক শিক্ষিত নারীও পড়াশোনা শেষ করে তেমন কিছু করেন না বা অনেকে করার সুযোগ পান না। সেখানে প্রচুর শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত নারী ফ্রিল্যান্সিং করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। নিজেরাই হচ্ছেন উদ্দোক্তা। সংসার সামলানোর সাথে সাথে ঘরে বসেই আয় করার সুযোগ পাচ্ছে তারা। এতে করে নারীরা যেমন নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন তেমনি তারাও আবদান রাখছেন দেশের অর্থনীতিতে। আর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে নারীর স্বাধীনতা।

ফ্রিল্যান্সিং এবং/অথবা আউটসোরসিং ঃ

বাংলাদেশে এখন কয়েকশত ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা তাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ঈরষনীও সাফল্য পেয়েছেন। যারা আমাদের কাছে অনুকরণীয়। এছাড়াও আরও সহস্রাধিক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা মোটামুটিভাবে সফল। তারা সবাই আউটসোরসিং এর মাধ্যমে নিজেকে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু সবাই সবসময় সঠিকভাবে সঠিক কথা বলতে পারেনা বা বিঝাতে পারেন না। আমি অনেককেই দেখেছি যারা ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোরসিং এই বিষয় গুলি সম্পর্কে স্পষ্ট করে জানেন না বা বুঝেন না। অনেকেই আছেন যারা শুধুমাত্র হাজার হাজার ঘন্টা কাজ করাকেই সফলতা মনে করেন। আবার অনেকেই আছেন যারা মনে করেন যে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করাই হল সফলতা। আমাদেরকে আগে পরিস্কারভাবে জানতে হবে ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোরসিং এই বিষয়গুলি। যেমন ধরি মোবারক হোসেন ভাইয়ের কথা। তিনি প্রথমত একজন ব্যাংকার। একজন ফিনান্সিয়াল এনালিস্ট হিসেবে একটি ব্যাংকে চাকরিরত আছেন। দ্বিতীয়ত একজন বিজনেস প্লানিং কনসাল্টেন্ট হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং করছেন। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্যে কাজ গুলো অউটসোরস করছেন বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে। তাহলে আমি তাকে বলতে পারি তিনি একজন ফিনান্সিয়াল এডভাইজার। একাধারে কাজ করছেন ব্যাংকে, পাশপাশি আউটসোরসিং করছেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে। একইরকম আরও অনেক উদাহরন আছে আমাদের সামনে। আমাদের দেশে এমন কয়েকশ প্রতিষ্ঠানও আছে যারা আউটসোরসিং কাজ করছেন বিভিন্ন সেক্টরে। ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত প্রায় সবাই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানেন। কিন্তু নতুনরা সবাই ভালভাবে জানেন না। এই অংশটুকু তাদের জন্যেই লেখা।

সফল হওয়ার পূর্বশর্তঃ

আমার মতে ফ্রিল্যান্সিং লাইফ এ সফল হতে হলে যে যে গুন গুলো আমার মধ্যে অবশ্যই থাকা উচিত তা হল নিজ নিজ কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা, সততা, ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম এবং ইংরেজিতে যোগাযোগ করতে পারার ক্ষমতা।

ফ্রিল্যান্সিং এ আগ্রহী নতুনরা যা করতে পারেনঃ

নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং এ আগ্রহী তাদের কে প্রথমেই বলবো কাজ শিখুন, কাজ পাবেন। অনেকেই আছেন যারা অল্প অল্প কাজ শিখেই এপ্লাই করা শুরু করে, এদের কেউ কেউ কাজ পেয়েও যায়। কিন্তু সফলতার সাথে সবাই কাজ শেষ করতে পারে না। তখন ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পরে। বাজে কমেন্ট ও ফিডব্যাক পাওয়ার কারনে নতুন কাজ পেতে সমস্যায় পরে। কিছুদিনের মধ্যেই হতাশ হয়ে পরে এবং অন্যকেও নিরুৎসাহিত করে। তাই কাজ ভালোভাবে শিখে তারপর শুরু করুন। এরপর আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কমিউনিক্যাশন স্কিল। আমি এমন কিছু দক্ষ ডেভলপারকে চিনি যারা অনেক কঠিন কঠিন সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করতে পারেন। কিন্তু অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে গিয়ে সফল হতে পারেননি শুধুমাত্র ক্লায়েন্ট কি বলছে তা বুঝেননি অথবা ক্লায়েন্টকে বুঝাতে পারেননি তিনি কিভাবে কাজটি করবেন। এটি শুধুমাত্র কমিউনিক্যাশন স্কিলের অভাবে হয়। ইংরেজিতে অনেক ভালো না হলেও চলবে। কিন্তু নুন্যতম কমিউনিক্যাটিভ ইংলিশ জানা থাকতে হবে। এরপর আসে ধৈর্যের কথা। নিয়মিতভাবে আপনার কাজ থাকবে কিংবা প্রতিমাসে আপনি অনেক অনেক টাকা কামাবেন এটা আশা করা ঠিক হবেনা। এমন কিছু সময় আসবে যখন প্রচুর আবেদন করার পরও কোন রিপ্লাই পাবেন না। এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। সারা বিশ্ব থেকে যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী আসবে সেখানে অনেক সময়ই কাজ না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হয় নতুন কাজের জন্যে। তাই যারা এই চ্যালেঞ্জ নিতে পারবে তাদেরই শুধু এ ধরনের কাজে আসা উচিত হবে। এছাড়াও কিছু কিছু খুঁটিনাটি বিষয় আছে যেগুলো সময়ের সাথে সাথে শেখা হয়ে যায়। আর আপনি কোন ধরনের কাজ করবেন সেটা ঠিক করবেন আপনি। হাজারো রকমের কাজ আছে। আপনার যেই কাজটার প্রতি আগ্রহ আছে সেটার উপর দক্ষতা অর্জন করুন তারপর কাজে লেগে পড়ুন। এ বিশ্ব আপনার জন্যেই অপেক্ষা করছে।

সফল ফ্রিল্যান্সারদের কাছে আমার প্রত্যাশাঃ

সেদিনের ইভেন্টে আমি কিছু সফল ফ্রিল্যান্সারের গল্প শুনছিলাম। তাদের নিজেদের জিবনের গল্প এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা আমাকে অনুপ্রানিত করেছে আজকে লিখতে বসতে। এদের মধ্যে যাদের গল্প এবং উপদেশ দুইটাই আমাকে অনুপ্রানিত করেছে তারা হল সাইদ ইসলাম, মোবারক হোসেন, নাদিম সকার, জহিরুল ইসলাম, জাকারিয়া স্বপন এবং প্রথম সারিতে থাকা সেই আংকেল (দুঃখিত নাম ভুলে যাওয়ার জন্যে)। তাদের গল্প এবং দিকনির্দেশনা দুটির মাঝেই শিক্ষণীয় অনেক কিছু আছে। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু অসাধু লোক এই সফল ব্যাক্তিদের সাফল্যের ইতিহাস বিক্রি করে নতুন নতুন ব্যাবসা খুলে বসেছে। তারা বিভিন্ন ভাবে অনলাইনে কাজ শিখানোর নামে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এটা আমাদের দেশের একটি পুরানো সমস্যা। আমরা নতুন কোন সম্ভাবনার সৃষ্টি হলে বুঝে এবং না বুঝে টা গলা টিপে হত্যা করি। আমি নিজে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে চাইবো ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে ও যেন এটা না হয়। যেমন অনেক নতুন নতুন ফ্রিল্যান্সাররা অল্প কিছু কাজ শিখেই বিভিন্ন ব্লগ লিখা শুরু করেন। বিভিন্ন বিষয়ের উপর টিউটোরিয়াল বানিয়ে ফেলেন। কেউ কেউ ব্লগ লিখেন ফ্রিল্যান্সার হওয়ার তিন উপায়, দশ উপায় নিয়ে। কিংবা রাতারাতি ডলার কামিয়ে বড়লোক হওয়ার গল্প লেখেন অনেকে। অন্যরা হচ্ছেন দিকভ্রান্ত। রাতারাতি ডলার কামানোর স্বপ্ন নিয়ে সেদিনই হয়ে যান ফ্রিল্যান্সার। প্রিয় টেক কর্তৃপক্ষের উচিত এইসব লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে আরও একটু সতর্ক হওয়া। এই জন্য আমি চাইব যারা সফল তারাও খুব আন্তরিকতা এবং সতর্কতার সাথে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করেন। আমি চাই যারা সফল তারা যেন আমাদেরকে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে আমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত হতে সহায়তা করবেন। বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ধারনার পক্ষে বিপক্ষে নিজেদের মতামত তুলে ধরে আমাদেরকে উপকৃত করবেন। এজন্যে আমআদের সবচাইতে বেশী প্রয়োজন একটি নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম। সর্বচ্চো সাফল্যপ্রাপ্তরা একত্রিত হয়ে যদি একটি ব্লগ এ নিয়মিত লিখতেন তাহলেও আমরা উপকৃত হতাম। নতুন কোথাও না হোক, এই প্রিয় টেক ও আপনাদের প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। কিংবা প্রিয় টেক এর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত ভাবে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর অভিজ্ঞ , সফল ও দক্ষ ব্যাক্তিদের লেখা সংগ্রহ করে প্রকাশ করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং জগতে বিদ্যমান প্রতিকুলতাসমুহঃ

এতোসব সম্ভাবনা এবং সফলতার মধ্যেও বেশ কিছু সমস্যাও আছে। এর মধ্যে সবচাইতে বড় সমস্যা হল সরকারী ও বেসরকারি উভয় জায়গা হতেই প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এর মধ্যে আছে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সার্ভিসের অভাব, বিদ্যুৎ ঘাটতি, অপর্যাপ্ত ব্যাংকিং ব্যাবস্থা ইত্যাদি। আরও শঙ্কার বিষয় হচ্ছে এই সম্ভাবনা এবং সফলতার গল্পগুলোকে পুজি করে বা ব্যবহার করে কিছু অসাধু লোক বিভিন্ন নামে ভুয়া ট্রেনিং সেন্টার খুলে বসেছে। সেখানে অল্প জানা ট্রেইনাররা ভুল্ভাল কাজ শেখাচ্ছে আগ্রহীদেরকে। যেখানে অনেক তরুন প্রতারিত হয়ে হতাশ হচ্ছে।

শেষকথাঃ

পরিশেষে, এই সম্ভাবনার হাত ধরে আমরা যারা মনে প্রানে তরুন আছি, তারা যেন একটি সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে রেখে জেতে পারি এই কামনাই করি। সবার কাছে একটা প্রার্থণা করি আমি যেন আমার কাজের ক্ষেত্রে সফল হতে পারি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং ভালো থাকবেন।

মোঃ তানভীর রহমান।
ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল।
ঢাকা, বাংলাদেশ।

শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬

১০ হাজারের অপেক্ষায় রোমাঞ্চিত গেইল

টি-টোয়েন্টি রানের এভারেস্ট গড়েছেন অনেক আগেই। এখন নতুন উচ্চতা ছোঁয়ার অপেক্ষা। আর ৩৩২ রান করলেই স্পর্শ করবেন ১০ হাজার রান। সংবাদকর্মীদের একজন প্রসঙ্গটি তুলতেই মুখের কথা কেড়ে নিলেন ক্রিস গেইল, “৩০০ রান দরকার? তোমার উচিত ছিল আমাকে আগে জানানো, তাহলে শুরু থেকেই খেলতাম! হাহাহাহা…।”

গেইল রসিকতা করলেও কীর্তিটি রসিকতার মত নয়। টি-টোয়েন্টিতে ১০ হাজার রান,  ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে সংখ্যাটি এক সময় ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু গেইলের ব্যাট রচনা করেছে অভাবনীয় এমন অনেক অধ্যায়ই।

ক্রিকেট বিশ্ব জুড়ে নানা লিগ, টুর্নামেন্ট, ম্যাচে ১৮টি দলের হয়ে খেলেছেন গেইল। ২৭২ ম্যাচে রান এখন ৯ হাজার ৬৬৮। টি-টোয়েন্টিতে ৮ হাজার রানও নেই আর কারও। ৭ হাজারও ছুঁয়েছেন কেবল আর ব্র্যাড হজ (৭ হাজার ৫২)।

১৮টি সেঞ্চুরি করেছেন গেইল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি করা ব্রেন্ডন ম্যাককালাম অর্ধেকেরও কম, ৭টি। ২৬৭ ইনিংসে ৭০০-র বেশি ছক্কা মেরেছেন গেইল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কাইরন পোলার্ডের ছক্কা ৩১ ইনিংস বেশি খেলেও মোটে ৪১২টি!

বিপিএলে এবার চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে খেলবেন গেইল। ম্যাচ পাবেন অন্তত ৪টি, দল প্লে অফে উঠলে ম্যাচ হতে পারে সর্বোচ্চ ৭টি পর্যন্ত। ১০ হাজার ছুঁতে প্রয়োজনীয় ৩৩২ রান এই সময়ে করা সম্ভব খুব খুব ভালোভাবেই। বিপিএলে ১০ ম্যাচ খেলেই তো রান করেছেন ৫৪১, সেঞ্চুরি ৩টি!

মাইলফলকের হাতছানিতে রোমাঞ্চিত গেইলও। তবে এখনই তাকাতে চান না খুব বেশি সামনে। বরং তার ভাবনা জুড়ে আছে দলকে শেষ চারে নেওয়া।

“সত্যি বলতে, ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া হবে দারুণ ব্যাপার। আমি হব প্রথম ব্যাটসম্যান। তবে আবারও বলছি, আগামীকালের শুরুটাই হবে গুরুত্বপূর্ণ। যত দ্রুত সম্ভব মানিয়ে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। সত্যি করে বলতে, মূল লক্ষ্য দলকে প্লে অফে কোয়ালিফাই করানো।”

লক্ষ্য পূরণের পথে গেইলের অভিযানের প্রথম ধাপ রোববারই। চিটাগং ভাইকিংসের প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স।

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

বিপিএলের উজ্জ্বলতম তারকা ক্রিস গেইল


প্রথম বিপিএলের প্রথম ম্যাচটিই মাতিয়েছিলেন বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে। এরপর স্বল্প উপস্থিতিতেও বিপিএলের উজ্জ্বলতম তারকা ক্রিস গেইল। আবারও প্রিয় মঞ্চে ঝড় তোলার অপেক্ষায় জ্যামাইকান ব্যাটিং দানব। বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে খেলতে শুক্রবার পা রেখেছেন ঢাকায়।

প্রথম বিপিএলের প্রথম ম্যাচে বরিশাল বার্নাসের হয়ে সিলেট সুপার স্টার্সের বিপক্ষে ৪৪ বলে করেছিলেন অপরাজিত ১০১। ছক্কা ছিল ১০টি। সেঞ্চুরি ছোঁয়া ছক্কায় লেগ স্পিনার নূর হোসেন মুন্নাকে শের-ই-বাংলার গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের ছাদে আছড়ে ফেলেছিলেন স্টেডিয়ামের বাইরে।
সেবারের বিপিএলেই ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ১১ ছক্কায় করেছিলেন ৬১ বলে ১১৬। দ্বিতীয় বিপিএলে একটি মাত্র ম্যাচই খেলেছিলেন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে। সিলেট রয়্যালসের বিপক্ষে এক ডজন ছক্কায় করেছিলেন ৫১ বলে ১১৪।
গত বিপিএলে বরিশাল বুলসের হয়ে খেলেছিলেন চার ম্যাচ। কোনো সেঞ্চুরি পাননি। তবে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৯ ছক্কায় ৪৭ বলে করেছিলেন অপরাজিত ৯২।
সব মিলিয়ে বিপিএলে ম্যাচ খেলেছেন ১০টি। ৭৭.২৮ গড়ে রান ৫৪১। স্ট্রাইক রেট অতিমানবীয়, ১৮৬.৫৫। সেঞ্চুরি তিনটি। বিপিএলে একাধিক সেঞ্চুরি করা একমাত্র ব্যাটসম্যান তিনি। মাত্র ১০ ইনিংসেই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড অনায়াসে তার, ৫০টি! ৩৬টি ছক্কা নিয়ে দুইয়ে থাকা সাব্বির রহমান খেলেছেন ৩৬ ইনিংস।
এবারও টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই আলোচনা ছিল গেইলকে নিয়ে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, চট্টগ্রাম পর্বেই দেখা যেতে পারে এই বাঁহাতিকে। অবশেষে এলেন তিনি টুর্নামেন্টের শেষ পর্বে।
রোববার রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই মাঠে নামবেন গেইল। খুনে ব্যাটসম্যানের সঙ্গে তামিম ইকবালের উদ্বোধনী জুটি দেখার অপেক্ষায়ও তর সইছে না অনেকের।
প্রাথমিক পর্বে আর চারটি ম্যাচ বাকি আছে চিটাগংয়ের। ৮ ম্যাচে সমান চারটি করে জয় ও হারে শেষ চারের লড়াইয়ে ভালোমতোই আছে দলটি। গেইলকে পেয়ে তাদের আশার পালে লাগছে আরও জোর হাওয়া।